সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ-লন্ডন
লন্ডনের ক্যানারি ওয়ার্ফে জেপি মর্গান ব্যাংকের ইউরোপিয়ান হেড কোয়ার্টার বিশাল উচ্চতায় অধিষ্ঠিত ৫০০শত ফুট উপরের ছাদের উপরে স্কাইক্রাপার থেকে কাউকে কিছু না জানিয়ে লাফ দিয়ে নীচে পড়ে একেবারে থেঁতলে গেলেন ব্যাংকটির দীর্ঘদিনের এক্সিকিউটিভ গ্যাব্রিয়েল ম্যাগী। ৩৯ বছর বয়স্ক মিঃ ম্যাগী বিগত ছয় বছর থেকে আমেরিকান জায়ান্ট প্রাইভেট এই ফাইন্যানসিয়াল প্রতিষ্ঠানের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ করছিলেন। মাত্র কিছুদিন আগে ব্যাংকের সাথে তার চুক্তি হয়েছিলো সপ্তাহে পাঁচ দিনের পরিবর্তে চারদিন তিনি কাজ করবেন এবং ব্যাংক খুশী হয়েই তাকে সে সুযোগও দিয়েছিলো। অথচ গতকাল আচমকা এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর জানান দিয়ে তিনি হয়ে গেলেন সারা বিশ্বের শীর্ষ খবর।
আমেরিকান সিটিজেন মিঃ ম্যাগী লন্ডনে মুভ হওয়ার আগে দীর্ঘ দশ বছর নিউ ইয়র্কে জেপি মর্গানে কাজ করেন।
মিঃ ম্যাগীর গার্লফ্রেন্ড ভেরোনিকার সাথে অত্যন্ত সুসম্পর্কই ছিলো বলে তার আমেরিকান মা বাবা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন এবং তাদের ধারণা দুজনেই লন্ডনে অত্যন্ত সুখী ও হাসি খুশী ছিলেন।
মিঃ ম্যাগীর অকস্মাৎ এমন মৃত্যুতে তার আমেরিকান মা বাবা বড় বিস্মিত ও হতবাক হয়েছেন। তার মা মিসেস ম্যাগী এবং বাবা বিল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ছেলের এমন অস্বাভাবিক মৃত্যুতে তারা খুব ভেঙ্গে পড়েছেন এবং ধারণাই করতে পারছেননা, তাদের এমন হাসি খুশী ছেলে গ্যাব্রিয়েল এমন কাজ করতেই পারে।
তারা আরো জানিয়েছেন, তারা ইতিমধ্যেই জেপি মর্গান, পুলিশ, তার গার্লফ্রেন্ড, স্থানীয় সংস্থা সহ সকল কর্তৃপক্ষের সাথে ইতিমধ্যেই কথা বলেছেন। তারা জানতে চান, গ্যাব্রিয়েল কেন এমন কাজ করলো এবং আসলেই কি ঘটেছিলো, কি করে গ্যাব্রিয়েল ব্যাংকের এতো উপরে স্কাইক্রাপার লাইনে উঠে গেলো- তারা এই আনসার জানার জন্যে শীঘ্রই লন্ডনে আসছেন বলে জানিয়েছেন।
আইটি এক্সপার্ট এই পরিবার বর্তমানে মেক্সিকোতে বাস করছেন।ধারণা করা হচ্ছে, গ্যাব্রিয়েলের গার্লফ্রেন্ডও একজন আমেরিকান।
মিঃ ম্যাগীর মা মিসেস ম্যাগী সাংবাদিকদের কাছে বলেছেন, তার ছেলে গ্যাব্রিয়েল মূলত ফেরশতাকূলের সর্দার হযরত জিবরাঈল আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামের সাথে মিল রেখেই নাম, যিনি সব সময়ই আল্লাহর (তার মতে গডের) তরফ থেকে ম্যাসেজ (ওহী) নিয়ে আসতেন- মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ( তার মতে মোহাম্মদের ) কাছে, যাতে সব সময়ই অত্যন্ত ভালো ভালো উপদেশ ও নির্দেশনা থাকতো, তেমনটাই তার ছেলে সব সময়ই তার মতে ভালো ভালো কাজ করতো।
নিউ ইয়র্কে গ্যাব্রিয়েলের রয়েছে ব্যাপক বন্ধু মহল, যারা তার এই অস্বাভাবিক মৃত্যু সংবাদে বড় মর্মাহত হয়েছেন। এমন অস্বাভাবিক মৃত্যু তারা কেউই মেনে নিতে পারছেননা। তার বন্ধুদের সকলেই বলছেন গ্যাব্রিয়েলের জীবন যাপন প্রণালী অত্যন্ত পরিষ্কার ও স্বচ্ছ, সে এমন কোন কারণ নেই যে বিশাল উচুতায় অধিষ্ঠিত ছাদের উপর থেকে লাফ দিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করতে পারে।
জেপি মর্গান এক ষ্ট্যাটম্যান্টে তাদের এই এক্সিকিউটিভের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে এবং তাকে হারিয়ে তারাও শোকাহত বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। একই সাথে ব্যাংকটি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেছে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। স্থানীয় এম্বাসীও এই ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোন প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেনি।
29th Jan 2014, Canary Wharf-JP Morgan HQ, London.