ইউ এস ট্রেজারি সেক্রেটারি পেনিড, আর হার্ভার্ড ইকোনোমিষ্ট লান প্রিচেট গত ৫ নভেম্বর চীন-ভারতের ৪২ ট্রিলিয়ন ডলারের ব্যবসা, ইনভেষ্টম্যান্টের বিপরীতে যে ইকোনোমিক গ্রোউথ- সেই ইনকোয়ারী রিপোর্ট প্রকাশ করেন, যা বিশ্ব অর্থনীতির আরেক দিকপাল, বিশ্লেষক লরেন্স স্যোমার তার রিপোর্টেও ঐ একই চীন-ভারতের আগামী দশকের নিরবচ্ছিন্ন গ্রোউথ ব্যাপারে শত বাধা, শত ঝড়-ঝঞ্ঝা,আর্থিক ঝুঁকি ও অর্থনীতির সূচক উপর নীচ হওয়ার পরেও মাত্রাতিরিক্ত হারে বৃদ্ধির আকাশ ছুয়ী আশঙ্কা প্রকাশ করে মতামত ব্যক্ত করেছেন।
ব্লমবার্গ, আমেরিকান ষ্টক মার্কেট, জাপান, চীন, ভারত সহ সারা পৃথিবীর ষ্টক মার্কেট যার নখ দর্পণে ও এক ফিঙ্গার ট্রিগারের নাগালে, সেই স্যোমার যখন তার আর্থিক এই অসম্ভব শঙ্কার রিপোর্ট প্রকাশ করছিলেন, তখন বিশ্বের নামকরা তাবৎ অর্থনীতির বিশ্লেষক, নির্দেশক, হার্ভার্ডের তাত্ত্বিকেরা উপস্থিত ছিলেন এবং একের পর এক তার ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং এম্বিশিয়াস এই ধারণার প্রশ্নের পর প্রশ্ন উত্থাপন বিভিন্ন ডাটা তথ্য বিশ্লেষণ করে উচ্চারিত হচ্ছিলো। অথচ স্যোমার তখনো সেই সব ডাটা এনালাইসিস করে তার বক্তব্যে থাকেন অটল।
লরেন্স স্যোমার ২০০৭ সালের মে মাসেও জাপানে এডিবির বার্ষিক বৈঠকে চীনের ও ভারতের এই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ক্রমবর্ধমান ধারা অব্যাহত থাকার বিষয়ে তার মতামত ব্যক্ত করেছিলেন,যখন এডিবি তাকে এই বিষয়ে তার বক্তব্য উপস্থাপনের সুযোগ প্রদান করেছিলো।
তার মতে চীন ও ভারতের প্রবৃদ্ধি ৭% থেকে ১০% বৃদ্ধি পাবে ফরেভার।ব্লুমবার্গ এখানে এসে পয়েন্ট আউট করে বলছে, তারা স্যোমারকে তখন মনে করিয়ে দিয়েছিলো, ব্যাংক অব আমেরিকা তাদের রিপোর্টে জোসেফ কুনলাইন তার টাইটলড-এ লিখেছেন, চায়নার অর্থনীতি রোল আমেরিকান অর্থনীতির জন্য সুগারডাডি- ব্লুমবার্গ বলছে তখন এই রিপোর্টের ব্যাপারে তারা হাসাহাসি করেছিলো, অথচ আজকের বাস্তবতায় তা সত্যে পরিণত হতে চলেছে।
হার্ভার্ড ইকোনোমিষ্ট প্রিচেট এখানে এসে বলছেন, বর্তমান সময়ে চীন-ভারতের ৪২ ট্রিলিয়ন ডলারের এনকোয়ারী, যা তাদের জিডিপির সিনারীও একেবারেই বদলে দেবে।শুধু কি তাই এই অবস্থা তাদের জিডিপি ২০৩৩ সাল পর্যন্ত কন্টিনিউ বাড়তেই থাকবে, যা ৫৬ ট্রিলিয়ন ডলারে গিয়ে পৌছবে।যদিও আর্থিক মন্দা, নানান আর্থিক ঝুঁকি, ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক সূচক উঠা-নামা করবে বা নিম্নগামী হবে, তথাপি এই অবস্থা কোন কোন পর্যায়ে এই সময়ের ভিতরে ১২ট্রিলিয়ন এবং ১৫.৫ট্রিলিয়ন ডলার, যা উপরোক্ত ৪২ ট্রিলিয়ন ডলারের মধ্যেই উঠা-নামা করবে, যা ইউ এস ইকোনোমির ২.৭ টাইমস ওভার। স্যোমার এবং প্রিচেট তাই এশিয়ার এই দুই টাইগারের মিলিত ইকোনোমিক গ্রোথকে এশিয়াফোরিয়া হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন ।
তারা আরো বলছেন, এটা সত্য, এবং খাটি সত্য যে, কোন দেশের অর্থনীতির সূচক ও প্রবৃদ্ধি একই অবস্থায় যায়না। এটা কোন দেশের পক্ষেই গ্যারান্টি দেয়া সম্ভব নয়, হউক সে যত বড় ধনী কিংবা যত বড় গরীব কিংবা সেখানে যে ধরনের সরকার ও প্রশাসনই থাকুক না কেন। অর্থনীতির গণ্ডির আবহ প্রবাহ ও জিডিপি বৃদ্ধির নিশ্চিত গ্যারান্টি কারও পক্ষে দেয়া সম্ভব নয়।
প্রাকৃতিক পরিমণ্ডল ছাড়াও বিশ্বের অর্থনীতির উত্থান-পতনের সাথে বিভিন্ন দেশের আর্থিক প্রবৃদ্ধি জড়িত।
তার পরেও নানা মুনীর নানা প্রশ্নের উত্তর এমন করে দেয়ার পরেও লরেন্স স্যোমার বলছেন, বিগত দশ বছর ধরে চায়নার অর্থনীতি ক্রমেই বৃদ্ধি পেয়ে চলছে। জিডিপি বেড়েই যাচ্ছে। আর্থিক খাত ও প্রতিষ্ঠান সমূহ সুসংহত হওয়ার সাথে সাথে জাতীয় আয় বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে।
স্যোমার, প্রিচেট এবং তাদের সাথে মিলে এক্স১ জিনিপং মিলিতসুরে ব্লুমবার্গ বলছে, চায়নার সাথে ভারতের অর্থনীতি ঐতিহাসিকভাবেই উর্ধ্ব গতির সূচকের ইতিহাস এবং সাম্প্রতিক তিন বছর ধরে বিশ্ব মন্দা ও আর্থিক ধ্বসের সময়েও চায়না ও ভারত আর্থিক স্থিতাবস্থার সাথে ব্যবসা, বাণিজ্য, বিনিয়োগ প্রভৃতি ক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্যের পাশাপাশি জাতীয় আয় তিনগুণের উপরে করেছে এবং স্থায়িত্বকালও সমান পর্যায়ের সময়কালীন ধরে রাখছে, যা যে কোন অনিশ্চয়তা ও আর্থিক নিম্ন গতির সময়ও এই দুই জায়ান্ট টাইগার অব্যাহত রাখতে বদ্ধ পরিকর।
Salim932@googlemail.com
28th November 2013, London