০১) একদিকে শেখ হাসিনার সর্বদলীয় সরকার আর তার অধীনে নির্বাচনের অঙ্গীকার, আর অন্যদিকে খালেদা জিয়ার নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচন ও হাসিনার পদত্যাগ- এই দুই অনড় অবস্থানের প্রেক্ষিতে জ্বলছে বাংলাদেশ। তিনদিন ধরে সারা বাংলাদেশ একদিকে উত্থাল, অন্যদিকে বাসে, ট্রেনে অগ্নিসংযোগ করে মানুষকে দগ্ধ করা হচ্ছে। ট্রেন লাইন উপড়ে ফেলা হচ্ছে।স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসা সবই বন্ধ।
ছেলে মেয়েদের পরীক্ষা বন্ধ, ফলে শিক্ষাজীবন ধ্বংস হতে চলেছে।সিএনজি, বাস, কারের গ্লাস চূর্ণ-বিচূর্ণ করা হচ্ছে।পুলিশও মারমুখী হয়ে বেধড়ক লাঠিপেটা করছে। কোথাও কোথাও জামায়াত-শিবির বড় হিংস্র, নৃশংস কায়দায় আন্দোলনের নামে তাণ্ডব করে চলেছে। ইতিমধ্যে কমপক্ষে ২০জন নিহত হয়েছেন।
আন্দোলন, সহিংস, সংঘাত আর বাংলাদেশের এই ভয়াল চিত্র দেখে বিশ্বখ্যাত টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরা নিউজ করেছে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক এই উত্থাল অবস্থা কি দুই (নেত্রীর)পার্সোনাল ক্ল্যাশ বলে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে পুরো চিত্র তুলে ধরেছে। রাজনৈতিক এই ভয়াবহ খেলার মূলে সূক্ষ্মবিচারে আসলেইতো দুই নেত্রীর ব্যক্তিগত ক্ষমতার সাধ আর লিপ্সা থেকে গোটা জাতির কপালে আজ নেমে এসেছে দুর্যোগ।বাংলাদেশ আজ বিশ্ব মিডিয়ায় কেবল এক ভয়ঙ্কর সহিংস রাজনৈতিক পরিমণ্ডলের এক দেশ ছাড়া যেন আর কিছুই নয় ? অথচ এমনতো হওয়ার কথাছিলোনা। এই সহিংস রাজনৈতিক অবস্থার জন্য বঙ্গবন্ধু আর জিয়াউর রহমানদের মতো যুগ শ্রেষ্ঠ নেতৃত্ব আর সেনানায়কেরা জীবন বাজী রেখে ছাত্র-জনতাকে সাথে নিয়ে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেনি ?
০২) সারা দেশ যখন জ্বলছে, জনগণ যখন লাশ হয়ে ঘরে ফিরছে, হাসপাতালের বেডে যখন দগ্ধ দেহ নিয়ে মানুষ কাতরাচ্ছে, তখনো আমাদের রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা নিজেদের রাজনৈতিক খেলা আর একে অন্যকে ঘায়েল, আর তথাকথিত দাবী, কেউ কেউ আবার বহিষ্কার-পাল্টা বহিষ্কার, আবার কেউ কেউ রাজনৈতিক এই উত্থাল হাওয়ায় নিজেকে আরো বিশিষ্ট করে তুলা, অন্য একদল আছেন তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলা, আর ইসলাম ও মানবতার ধ্বজাধারীরা হেফাজত আর জালিম আর সেক্যুলার শব্দের তথাকথিত মারপ্যাঁচ নিয়ে মিডিয়া সরগরম করে আছে, এ যেন জনগণের সাথে নিদারুণ এক মস্করা করে চলা। লজ্জা হয় সেই সব সকল নেতৃবৃন্দের জন্যে, সারা দেশ যেখানে উত্থাল, অশান্ত, মানুষের জান মালের নিরাপত্তা নিয়ে যখন শঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন, স্কুল গামী ছেলে মেয়েদের গোটা শিক্ষাজীবন যখন আজ হুমকির মুখে, শ্রমজীবী, কর্মজীবী, পেশাজীবী মানুষের জীবন-জীবিকা যখন আজ আন্দোলন আর দমন এই দুইয়ের যাতা কলে পিষ্ঠ, তখনো সেই সব নেতৃবৃন্দ নসিহত আর দাবী আর আন্দোলন আর হুমকি-ধমকি দিয়ে চলে, তখন ভাবতে অবাক লাগে এই রাজনীতি কাদের জন্য ? এরা কোন গ্রহ থেকে এসেছে বা কোথায় নয়ে চলেছে আমাদের ? এত নিষ্ঠুর, নির্দয় আর বিবেকহীন মানুষ কি করে এই শাশ্বত বাংলায় বিচরণ করে বেড়ায়? হাজার বছরের ঐতিহ্য আর নদী মাতৃক, রূপসী বাংলা কি করে এই সব হায়েনা আর জন্তুদের বয়ে বেড়াচ্ছে ?
যে দাবী, যে আন্দোলন, যে সরকার আমার রেলের সম্পদ, মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে মারে, স্কুলের ছেলে মেয়েদের পড়া লেখা বন্ধ করে দেয়- সেই দাবী, সেই আন্দোলন, সেই সরকার- সব কিছুই বৃথা। ধিক তাদের সকলকে।আন্দোলন করবেন, সংগ্রাম করবেন, সরকার-ফরকার সব করবেন-জনগণ কোন বাধা হয়ে আসেনি। জনগণের সম্পদ ও জান মালের ক্ষতি সাধন কেন?
০৩) একশ্রেণীর পশু সুলভ হায়েনা, ৭১ এর পরাজিত শত্রু সুযোগের সদ্ব্যবহার নিয়ে আবারো সারা বাংলাদেশে রক্তের হুলি খেলার মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছে। চল্লিশ বছরের এই স্বাধীন বাংলাদেশে এই ছিলো কি প্রাপ্য ?
যে খেলা এখন দেশের বাইরে:
প্রিয় বাংলাদেশ, তোমাকে জাগতেই হবে। তোমার বুকে শায়িত তিতুমীর, শাহজালাল(র:), ক্ষুদিরাম, প্রীতিলতা, সোহরাওয়ার্দী, ফজলুল হক, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, মোশাররফ, জসীম উদ্দিন, তর্কবাগীশ, বঙ্গবন্ধ্, জিয়াউর রহমান, ভাসানী, রফিক, জব্বার সহ অসংখ্য অগণিত শহীদ। শত শহীদের রক্তে ভেজা এই বাংলায় আর কোন হায়েনা, আর কোন নরপশু দাঙ্গা, হাঙ্গামা, জ্বালাও-পোড়াও, আর তথাকথিত রাজনৈতিক গেইম খেলে ভণ্ডামি আর সার্কাসের দৃশ্য মঞ্চস্থ করে তোমাকে অপবিত্র করুক, ১৬ কোটি বাঙালি মনে প্রাণে তা চায়না। বাঙালি তা চায়না বলেই তোমার বুকে লালিত এই অথর্ব, অকর্মণ্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এখন তাদের হাত-পা বেঁধে রেখে দিয়েছে তাদের মুরুব্বী ঐ বিদেশের মাটিতে। বাংলাদেশের রাজনীতি এখন ঐ বিদেশের মাটি নয়াদিল্লী, ওয়াশিংটন, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য আর জাতি সংঘের সদর দপ্তরে গিয়ে নাকে খত দিয়ে টুকরাচ্ছে। লজ্জা হয়না এই সব ক্ষ্মমতা্লিপ্সু আর জেদি, অহংকারী রাজনীতিবিদদের। এদেরকে ইসাবেলার ন্যায় একসাথে একই জাহাজে তুলে দেশহীন এক অজানা গন্তব্যে ভাসিয়ে দেয়া উচিত।
বিদেশের মাটি থেকে ছক আকা হচ্ছে, একের পর এক ফর্মুলা আর প্রতি ফর্মুলা গেলানোর চেষ্টা তদ্বির আর বায়বীয় সব মিথ তৈরি করে সেই চর্বিত চরণ করা হচ্ছে। এখানে জনগণ কেবল উপলক্ষ মাত্র, সাক্ষী গোপাল।দুই দলের আর অতি বিশিষ্ট হওয়ার সেই দুর্দমনীয় লোভীদের কে কার আগে ক্ষমতায় বসবে, ক্ষমতায় গিয়ে সরকারের কাঁঠাল ভাঙ্গবে- সেই উন্মত্ত প্রতিযোগিতার লজ্জাহীন প্রতিযোগিতার মধ্যে গোটা বাংলাদেশকে জ্বালিয়ে ছার-খার করে দিতেছে।মানুষকে এখানে হায়েনা পশুর মতো শেষ করে দেয়া হচ্ছে।এই কি আমাদের মনুষ্যত্ব ?
ফর্মুলা, ফর্মুলা হায় হায় বিদেশ আর জাতিসংঘের একটা সুপারিশের জন্য কাঙ্গাল-
দিল্লী,ওয়াশিংটন, আর ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটু আশীর্বাদ আর সমর্থনের জন্য এই রাজনীতিবিদ এখন বাংলাদেশকে বানিয়ে ফেলছে পুরো এক গজবের আধারে।এরা এখন জাতি সংঘের আশীর্বাদ পেতে মরিয়া। দেশের শান্তি- শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনে এরা জাতি সংঘের দোহাই দিয়ে এই সোনার বাংলায় দিল্লীর নেতৃত্বে আর আমেরিকার সুপারভাইজারীতে ইউএন কনভেনশনের চ্যাপ্টার এইট-জাতি সংঘ পিস কিপিং এ রিজিওনাল সৈন্য মোতায়েন করে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে গড়ে উঠা বাঙালির অহংকার আমাদের নিজস্ব সেনাবাহিনীকে পর্যন্ত তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য না করে ক্ষান্ত হবে বলে মনে হচ্ছেনা।
নির্বাচন কমিশন তুমি এখন কার –
বিরাজমান অবস্থায় মানুষ এখন ভাবছে, এই কমিশন কি করতে চাচ্ছে। কার স্বার্থে একতরফা নির্বাচনের আজব খেলায় মেতে উঠছে। সাংবিধানিক বাধ্য বাধকতা শুধু কি নির্বাচন কমিশনের একার? আম জনতার কি কোন দায় বদ্ধতা নেই? কাদের জন্য নির্বাচন ওরা করতে চাচ্ছে ? রকিব কমিশন চাইলেই আরেকটু সংযত ও গণতান্ত্রিক হয়ে পরিস্থিতির কিছুটা হলেও উন্নতি করতে সহায়তা করতে পারতেন। সে সুযোগও ছিলো, যেমন করে শত বাধা-বিপত্তির মধ্যেও বিগত হুদা-ছহুল-সাখাওয়াত কমিশন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন। রকিব কমিশন কেন জানি সবার কাছেই বোধগম্য ভাবে প্রতীয়মান হচ্ছে, নিজেরাই নিজেদের আত্মাহুতি দেয়ার জন্যে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। আর যারা এধরনের কাজে ব্যস্ত, তাদেরকে আটকাবে কে?
ইলাংক সিনাওয়াত্রার সাথে হাসিনার সরকারের যোগসূত্র এবং আফটার ম্যাথ-
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ইলাংক সিনাওয়াত্রা যেমন করে আস্থা লাভে সক্ষম হচ্ছেন, ক্ষমতাসীন অন্দর মহলের রথি-মহারথিরা হাসিনাকে বুঝাচ্ছেন, এ যাত্রায় আপনি শক্ত হাতে হাল ধরলেও সিনাওয়াত্রার মতোই ঠিকে যাবেন। দলকেও মহা দুর্যোগ থেকে রক্ষা করতে পারবেন। ইলাংক সিনাওয়াত্রার বিরুদ্ধেও থাইবাসীদের বিক্ষোভ চলছে, হাসিনার বিরুদ্ধেও বিক্ষোভে উত্থাল বাংলাদেশ।ইকোনোমিক টাইমস এতোকিছুর মাঝেও হাসিনার সরকারকে সন্ত্রাসী ও মৌলবাদী, জঙ্গি উত্থানের বিরুদ্ধে একমাত্র ভরসা হিসেবে এই উপমহাদেশে ভারতের পাশে বিশ্বস্ত সঙ্গী হিসেবেই দেখছে। সেজন্যে কাড়ি কাড়ি টাকা ডালা হচ্ছে। এ যাত্রায় সেই শবের যাত্রী কাদের সিদ্দিকী যে হবেন, বলাই বাহুল্য। নতুবা চমকপ্রদ বক্তব্যের মাধ্যমে হাসিনা বিরোধী বক্তব্য দিয়ে ক্রেজ তৈরি ভারতীয় ছকে হাটবেন। সেজন্যেই পুরনো পাঁচ উপদেষ্টা পদত্যাগ করেছেন। কাদের সিদ্দিকীর সাথে আরো চমক নিয়ে নতুন চারজন উপদেষ্টা হাসিনার কেবিনেটে যোগ দিবেন।এদের একজন ১/১১ সময় খালেদা জিয়াকে ও অপরজন হাসিনাকে মাইনাস করতে উদ্যোগী ছিলেন। ভারত তার ফর্মুলা বাস্তবায়ন করতে সব চেষ্টাই করবে। যাকে কেনা দরকার, তাকে কিনবে, যাকে শেষ করা দরকার, তাকে শেষ করে দিবে। শুনা যাচ্ছে, এ পর্যায়ে সিলেটের তরুণ জাতীয়তাবাদী নেতা ইলিয়াসের ভাগ্য বরণ করতে যাচ্ছেন যেকোন দিন।ভাগ্য আরো খারাপ হলে ক্রস ফায়ারে সমাপ্তি হবে।
গণ-গ্রেপ্তার ও সেনাবাহিনী দিয়ে নির্বাচন-
গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট পেয়েই সরকার গণ-গ্রেপ্তারে নেমেছে। মীর নাছিরকে দিয়েই শুরু।খুব শীঘ্রই আরো একডজন সম্ভাব্য আন্দোলনকামী বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তার করা হবে।সেনাবাহিনী এখনি মাঠে তৎপর হতে চাচ্ছেন।নির্বাচনের ঠিক কিছু আগে ১০ হাজারের উপর সেনাসদস্য মাঠে নামবে। তারানকো ও সাঈদা ওয়ার্সীর সফর সামনে। দুজনের সফরকে সামনে রেখে সেনাবাহিনী এখনি মাঠে নামা সমীচীন মনে করছেনা। বিজিবিকে কঠোর হতে নির্দেশ দেয়া হচ্ছে।এতোদিন মধ্যপ্রাচ্য ও পাশের দেশের অনুরোধে জামায়াতের উপর সফট থাকলেও এখন আর সেই আগের অবস্থা নেই। মার্কিনীদের থ্রোতে জামায়াতকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, সরকার কঠোর হতে বাধ্য।জামায়াতের আরো অনেকেই এরেস্ট নয়তো সাক্ষাত নাশকতায় ক্রস ফায়ারে যাচ্ছেন।সিগন্যাল চলে গেছে।পুলিশও এখন আগের মতো বসে বসে মার খাবেনা।মাঠ পর্যায়ের ত্রিশজন ডিসি সেনাবাহিনী চেয়ে মতামত দিলেও বিজিবি দিয়ে আপাতত কঠোর পদক্ষেপ নিতে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। তারানকোর সফরের পর পরই অবস্থা বুঝে অপারেশন ক্লিন হার্টের আদলে অভিযান পরিচালনা করা হবে। এমনও হতে পারে, তারানকোর সফরের মধ্য দিয়েই সেনাবাহিনী মাঠে নামবে আন্তর্জাতিক অতিথিদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের অজুহাতে।
বিএনপি ও আঠারো দল ভাঙ্গনের নির্বাচন ও তারপর-
সরকার হয়তো সেনাবাহিনী মাঠে নামিয়ে যেন তেন পর্যায়ে নির্বাচন করে নিবে। কাড়ি কাড়ি টাকা আর এমপি হওয়ার নিশ্চয়তায় বিএনপি ও ১৮ দলে ভাঙ্গন ধরিয়ে কিছুটা সফল হওয়া যাবে। কিন্তু বিএনপি বিহীন নির্বাচন দেশের রাজনীতিতে স্বস্তির ও স্থিতিশীলতা কতোটুকু আনবে সেটাই এখন প্রশ্ন।জানমালের নিরাপত্তার অজুহাতে ব্যাপক ধর পাকড়ের প্রেক্ষিতে সরকার কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে চলে আসতেও পারে। কিন্তু তারপরে ? প্রধান বিরোধীদল বিহীন নির্বাচন দেশে ও বিদেশে প্রশ্ন থেকেই যাবে। আপাতত: সেনাবাহিনী নামিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নির্বাচন সম্পন্ন করা গেলেও নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা কিভাবে থামানো হবে? সে প্রশ্ন অনেকের জানা নেই। একতরফা কিংবা আওয়ামীলীগের সমর্থিত সকলে পার্লামেন্টে গিয়ে বড় জোর দুই থেকে আড়াই বছর ঠিকে গেলেও গরীব এই দেশে তিন বছরের মাথায় আবারো মধ্যবর্তী নির্বাচন দিতে হবে বা সরকার দিতে বাধ্য হবে।খালেদা জিয়া ও ১৮ দল তাদের কিছু কিছু ভুল রাজনৈতিক চালের কারণে নির্বাচনের ট্রেন মিস করলেও সরকারের যে ধারণা নির্বাচন পরবর্তী জনমত সরকারের পক্ষে একেবারে চলে যাবে, বিএনপি শেষ হয়ে যাবে- এমন সহজ সরলীকরণ কতোটুকু রাজনৈতিক যুক্তিসঙ্গত ও বাস্তব, সেটা নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। কেননা এখন পর্যন্ত বিএনপি ৪০% ও অধিক ভোটারের প্রতিনিধিত্ব করে। নির্বাচন পরবর্তী সরকারের নানা কৌশল আর রাজনৈতিক গেইমে এ অনুপাত কিছুটা কমলেও কোনভাবেই সে অনুপাত ৩৫ থেকে ৩৬ পার্সেন্ট এর নীচে নামবেনা। আর এই ৩৬ পার্সেন্ট ভোটারের সাথে মিলে জামায়াতের নতুন প্রজন্ম আর কট্টর মৌলবাদী হেফাজত ও অন্যান্যরা মিলে সব সময় পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে রাখবে।আর আওয়ামীলীগের একচ্ছত্র ক্ষমতার কারণে বাংলাদেশের ঐ অংশের সাথে ধীরে ধীরে জনগণও ফুসে উঠবে। তখনতো এর চাইতে আরো ভয়াবহ অবস্থা হবে।মোদ্দা কথা আসন্ন নির্বাচন সংকট সমাধানের বদলে সংকট আরো ঘনীভূত করবে।
বিকল্প জরুরী আইন-
তারানকোর ও সাঈদা ওয়ার্সীর সফরের মধ্য দিয়ে পরিস্থিতির উন্নতি না হলে কিংবা রাজনীতিতে নাটকীয় কোন পরিবর্তন না হলে, ক্রমবর্ধমান সহিংস রাজনৈতিক পরিবেশ মোকাবেলা করতে সরকার জরুরী আইনের দিকে ধাবিত হবে বলে অনেকেই মনে করছেন।আর জরুরী আইন মানেই বাক স্বাধীনতা ও অবাধ চিন্তা রহিত।বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা সেই দিকেই যাচ্ছে। বিদেশী বন্ধু আর মেহমানরা গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের সোচ্চারের আড়ালে জরুরী আইনের ভিতর থেকে নিজেদের সুপ্ত ফর্মুলা বাস্তবায়নে বেশী স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। বারে বার সেটাই প্রমাণিত।
কিন্তু প্রিয় বাংলাদেশ তুমি কি সেই দায় নিতে প্রস্তুত ? তোমার বুকে লালিত দুই নেত্রী আর দুই দলকে কে বুঝাবে ? শুনা কথা, যে জাতি পাপ ও অন্ধকারে থাকতে ভালবাসে, আল্লাহ পাক সেই জাতির ঘাড়ে সবচাইতে খারাপ নেতৃত্ব ( ক্ষমতায় হউক আর ক্ষমতার বাইরে হউক) চাপিয়ে দেন, যাতে সেই জাতি নিজেরাই ঝগড়া-ফ্যাসাদ করে আরো নষ্ট ও ধ্বংস ডেকে আনে। আমার বাংলাদেশ কি জেগে উঠবেনা, যেমন করে জেগেছিলো ৫২, ৬২, ৬৬,৭০ ও সর্বশেষ ৭১ ও ৯০ এ ।
Salim932@googlemail.com
28th November 2013, London.