অবশেষে সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রটোকল কর্মকর্তাকে ঘুমের মধ্যে রেখে সিঙ্গাপুর সময় গভীর রাতের কিছু পরে ভারতে নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ষ্টেট ডিপার্টপম্যান্টের আন্ডার সেক্রেটারি রেঙ্কের এক কর্মকর্তার সাথে গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সিঙ্গাপুরে অবস্থানরত, বাংলাদেশী ব্যবসায়ী, জাতীয়তাবাদী রাজনীতির অন্যতম পেট্রন ও একসময়ের অস্র ব্যবসায়ী, প্রভাবশালী আরবীয় ব্যবসায়ীর অংশীদার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এই বৈঠকের কিছু আগে বেগম জিয়ার সাথে যুক্তরাজ্য থেকে সিঙ্গাপুর গিয়ে জামায়াতের আন্তর্জাতিক লিয়াজো ও নীতি-নির্ধারক ব্যারিস্টার ও নিজামী পরিবারের আত্মীয়, মানচেস্টারের গোলাম আযম পরিবারের ব্যবসায়ী বন্ধু মিলে একান্ত গোপন শলা-পরামর্শ করেছেন।
লন্ডন থেকে বিএনপির প্রভাবশালী নীতি-নির্ধারক, যার জন্য গোটা বিএনপি অপেক্ষমান, তিনিও ঐ সময় সিঙ্গাপুর বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। এ রিপোর্ট যখন লেখা হচ্ছে, তখন তাদের চারজনই ফিরতি যাত্রা সিঙ্গাপুর এয়ার লাইন্সে লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছেন। সিঙ্গাপুর হাসপাতালের পডিয়াট্রি ডিপার্টম্যান্টের কনসালট্যান্টের কেবিনে বাংলাদেশী ঢাকার বিক্রমপুরের ডাক্তারের বিশেষ ব্যবস্থায় লন্ডনের ঐ চারনেতার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রটোকল কর্মকর্তার চোখ ফাঁকি দিয়ে সিঙ্গাপুরের কনসালট্যান্টের সাথে গাড়ীতে করে হাসপাতালের ডাক্তারদের গেইট দিয়ে চার নেতা সরাসরি এয়ারপোর্ট থেকে এসে ভিতরে ঢুকেন। তাদের মধ্যে এক ঘণ্টা ৪০ মিনিটের মতো বৈঠক হয়। এর পর পরই বাংলাদেশী ব্যবসায়ীর মধ্যস্থতায় মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সাথে বেগম জিয়ার সিঙ্গাপুরের ঐ বিশেষ বৈঠক সম্পন্ন হয়।
জানা গেছে, শুক্রবার কোন এক সময়ে জাতি সংঘ থেকে আসা দুজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে বেগম জিয়ার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।বাংলাদেশী ঐ ব্যবসায়ী ছাড়া এই সম্পর্কে আর কারো কোন ধারণা নেই, এমনকি বেগম জিয়ার সাথে থাকা ব্যক্তিগত টিমও একেবারে অন্ধকারে।এতো গোপনীয়তা মেইনটেন করা হচ্ছে।সব কিছু ঐ ব্যবসায়ী এবং সিঙ্গাপুরে কর্মরত ডাক্তার দেখ-ভাল করছেন। যে কারণে সিঙ্গাপুরস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসও একেবারে অন্ধকারে।
সিঙ্গাপুরস্থ ভারতীয় হাই কমিশনের এক কর্মকর্তারও এর মধ্যে সাক্ষাতের কথা রয়েছে বলে জানা গেছে।
লন্ডনের চার নেতার বিশেষ বৈঠকে বিস্তারিত জানা না গেলেও ধারণা পাওয়া গেছে, ২৫ অক্টোবরের পর থেকে হাসিনার সরকারের জন্য বেগম জিয়া ও জামায়াত জোটের চরমপত্র আসছে। জানাগেছে, বেগম জিয়া তাদেরকে বলেছেন, এখনি চরমপত্র দিলে হাসিনা সংবিধানের দোহাই দিয়ে জরুরী আইন জারী করবে ও একতরফা নির্বাচনের দিকে যাবে-হাসিনার এই গোপন ফর্মুলা মাথায় রেখেই চার নেতার সাথে বিকল্প আন্দোলন কৌশলের কথা আলোচনায় স্থান পেয়েছে। বিএনপিকে ভাঙ্গার সরকারি ষড়যন্ত্র সম্পর্কেও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। জামায়াতের ব্যারিস্টার নেতাকে যখন মোবাইলে ফোন দেই, তখন তিনি বলেন, সিঙ্গাপুর এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে, লন্ডনে ফিরছেন।বৈঠকের কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি অস্বীকার করেননি।
মার্কিন দূতাবাস, জাতি সংঘ সহ প্রভাবশালী দূতাবাসের পরামর্শ সংলাপের পথ সরকার পরিহার করে সংঘাতের দিকে দেশকে নিয়ে যাওয়ার জন্য তারাও শঙ্কিত। সে কারণে বেগম জিয়ার সাথে বিকল্প রাজনৈতিক শলা-পরামর্শ আলোচিত হয়েছে। মার্কিন দূতাবাসের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকের সূত্রে আভাস পাওয়া গেছে প্রভাবশালী সকলেই এখন পরিবর্তনের পক্ষে নমনীয়, সংঘাত, সহিংসতার বিরুদ্ধে, গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষার পক্ষে।
সিঙ্গাপুরে ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশী ডাক্তারকে বহু কষ্টে টেলিফোনে পাওয়ার পরে দুজনেই বলেছেন, দেশের স্বার্থে, জনগণের মুক্তির লক্ষ্যে নিউজ না করলেই কি নয়?
১১ অক্টোবর ২০১৩ .