২০১৩ সালের বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পেলেন এবার লন্ডনের বাংলা কমিউনিটি ও বাংলা মিডিয়ার অতি পরিচিত মুখ সাংবাদিক ইসহাক কাজল, গবেষক, ঐতিহাসিক ফারুক আহমদ। তাদের সাথে একই পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন জার্মানির বাঙালি ডঃ মোহাম্মদ জাকারিয়া। বাংলা একাডেমী বরাবর বিদেশে বাঙালি সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষকদের কাজের স্বীকৃতি দিয়ে আসছে।
তারই ধারাবাহিকতায় এবারকার প্রবাসে বাংলার সাহিত্য, শিল্প,সংস্কৃতিকে লালন,পালন,গবেষণায় ব্যাপক ভূমিকা রাখার জন্য লন্ডনের প্রবীণ সাংবাদিক, জনপ্রিয় সাপ্তাহিক জনমতের সাংবাদিক, একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির লন্ডনের অন্যতম নেতা ইসহাক কাজল, সেই সাথে ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করে খ্যাতি অর্জন করেছেন আরেক প্রবাসী ফারুক আহমদকে সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত করায় লন্ডন সহ প্রবাসী কমিউনিটিতে আনন্দ-উদ্দীপনা পরিলক্ষিত হয়।
যতদূর জানা যায়, এবং কবি, সাংবাদিক শামীম আজাদের তথ্যের সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে, ২০১০ সাল থেকেই প্রতি বছর লন্ডনে বাংলা একাডেমী বই মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। ইদানীং এই মেলা লন্ডনের বাঙালি কমিউনিটিতে বেশ সাড়া ও উদ্দীপনা জাগিয়েছে।আর এই মেলাকে কেন্দ্র করে বাংলা একাডেমী প্রবাসে এই পুরস্কারের প্রবর্তন করেছে বলে তাদের তথ্য সূত্রে জানা গেলো।তারই অংশ হিসেবে এই বৎসর জুন মাসের ১৫ ও ১৬ তারিখে পূর্ব লন্ডনের ব্রাডি আর্ট সেন্টারে দুইদিন ব্যাপী বই মেলা ২০১৩ অনুষ্ঠিত হয়। বিলেতের চ্যানেল আই সহ প্রায় সব কটা কমিউনিটি চ্যানেলে এর সচিত্র সংবাদ প্রকাশ করে। বাংলা একাডেমী লন্ডনের এই বই মেলার শুভ উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ থেকে আগত বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় সংস্কৃতি মন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ। আর বই মেলা উপলক্ষ্যে লন্ডনের আলতাব আলী পার্কের উন্মুক্ত স্থানে বেলুন ও পায়রা ছেড়ে দেন লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস বারার এক্সিকিউটিভ মেয়র লুৎফুর রহমান ।
জুন মাসের ২০ তারিখ ছিলো বাংলা একাডেমী বই মেলার সমাপনী অনুষ্ঠান। পূর্ব লন্ডনের হোয়াইট চাপেলস্থ আইডিয়া-তে অনুষ্ঠিত সমাপনী অনুষ্ঠানে এবারের প্রবাসে বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার ২০১৩ ঘোষণা করেন বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক ডঃ শামসুজ্জামান খান। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম মোস্তফার সভাপতিত্বে, ছড়াকার ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব দিলু নাসেরের পরিচালনায় সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লেখক, কলামিস্ট আব্দুল গাফফার চৌধুরী, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমীর পরিচালক শাহিদা খাতুন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কবি কাদের মাহমুদ, জনমতের প্রধান সম্পাদক সৈয়দ নাহাস পাশা, এনটিভি ইউকে-ইউরোপের সিইও সাবরিনা হোসেইন, কবি আতাউর রহমান প্রমুখ।
বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান তার বক্তৃতায় বলেন, বাংলা একাডেমী বহির্বিশ্বে বা ইউরোপে যে কোনও একটি নির্দিষ্ট নামে বাংলা একাডেমী পুরস্কারটির নামকরণের চিন্তা-ভাবনা করছে, যাতে বিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অনাবাসী বাঙালি লেখকদের মূল্যায়ন করা সম্ভব হয়। বাংলা একাডেমীর নতুন ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হওয়াসহ একাডেমীর উন্নয়ন ও পুনর্বিন্যাসের কাজের বর্ণনা দেন মহাপরিচালক। প্রবাসে সাহিত্য পুরস্কার প্রবর্তনের জন্য একাডেমীর পরিচালনা পর্ষদের প্রশংসা করে মহাপরিচালক এর গুরুত্ব এবং পরিধি নিয়েও বিশেষ ব্যাখ্যা উপস্থাপন করেন।
বাংলা একাডেমীর পরিচালক শাহিদা খাতুন তার বক্তব্যে বলেন, মানুষ শেকড় ছাড়া বাঁচতে পারেন না। প্রবাস থেকে বাঙালিরা শেকড়ের টানে, প্রাণের তাগিদে সাহিত্য ও সংস্কৃতিচর্চা করছেন। শাহিদা খাতুন আরো বলেন, প্রবাসেও সাহিত্য ও সংস্কৃতির একটি শক্ত ভিত রচিত হোক, তা আমাদের সকলেরই কাম্য।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে ছিলো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে সঙ্গীত পরিবেশন করেন হিমাংশু গোস্বামী।
Salim932@googlemail.com
29th June 2013.