সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ
লন্ডনে চিকিৎসাধীন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতি বেশ জমে উঠেছে। হঠাৎ করে ক্ষমতাসীনদের এই খেলা অর্থাৎ তারেক রহমান ইস্যু নিয়ে রাজনীতির মাঠ গরমের এই খেলা অনেকের কাছে বেশ বিস্ময়ের ও প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। ক্ষমতাসীন দল একের পর এক ফ্রন্ট ওপেন করে দিয়ে রাজনীতির গুটির চাল চালিয়ে যাচ্ছে।আর মিডিয়াও তা লুফে নিচ্ছে। নিবেনা কেন, এতো এতো জটিল খেলা হঠাৎ করে রাজনীতির ময়দানে উদয় হচ্ছে, তা স্বাভাবিক ও বোধগম্য কারণেও নেয়ার কথা। রেডিও তেহরানে বৈশাখী টেলিভিশনের সিও সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসানের আলোচনা শুনছিলাম, তারেক রহমানকে নিয়ে উনি খুব সুন্দরভাবেই রাজনৈতিক বিশ্লেষণ করছিলেন।ঠিক একই সময়ে আওয়ামীলীগ দলীয় সাংসদ গোলাম মাওলা রণি বিদেশী কূটনীতিকদের উদ্ধৃতি দিয়ে বেশ চমৎকার ভাবে রাজনৈতিক এই খেলার বর্ণনা সুন্দরভাবে টেনেছিলেন।এর একটু পরেই টেলিভিশন সংবাদে বাংলাদেশের এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম পরিষ্কার ভাবে বলেছেন, তারেক রহমানকে নিয়ে সরকারের বা আদালতের পরোয়ানা যথোপযুক্ত ভাবেই হয়েছে। মাহবুবে আলম আরেকটু এগিয়ে এসে সাংবাদিকদের কাছে বলেছেন, ব্রিটিশ সরকারের অনুরোধে আমরা একজন আসামীকে ব্রিটেনে ফেরত পাঠিয়েছি, সুতরাং আমাদের অনুরোধে ব্রিটিশ সরকারতো শুনতেই পারে। তবে আমদেরকে সে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে, দেখা যাক ব্রিটিশ সরকার কি করে।এদিকে যুদ্ধাপরাধী ট্রাইব্যুনালের আসামীদের পক্ষ হয়ে লড়ার জন্য আবেদন করে প্রত্যাখ্যাত ব্রিটেনের আইনজীবী টনি সাহেব তারেক রহমানের গ্রেপ্তারী পরোয়ানা তামিল করার জন্য ব্রিটিশ সরকার তথা স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড যে কার্যকর করবেনা, ব্রিটেনের এবং ইউরোপীয় আইনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে তিনি বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন, তা মানবজমিন সহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, একই সাথে ব্রিটেনে বসবাসরত বাঙালি সলিসিটর মিঃ পোদ্দারও স্পষ্টত: বলেছেন, ব্রিটিশ সরকার তারেক রহমানকে ফেরত পাঠাবেনা, ব্রিটেনের প্রচলিত আইনে এ রকম বাধ্যবাধকতা নেই, যেহেতু তিনি ব্রিটেনে এসাইলাম নিয়ে আছেন, এবং ব্রিটেনের আইন ভঙ্গ করার মতো কোন কাজ করেননি। তাছাড়া ব্রিটেন ও বাংলাদেশের মধ্যে অপরাধী আদান-প্রদানে কোন চুক্তি না থাকার কথাও উনাদের সকলেই বলেছেন। এদিকে আসিফ নজরুল সহ পিয়াস করীম, বদিউল আলম মজুমদার সকলেই একবাক্যে এই বক্তব্যের সাথে প্রায় একমত পোষণ করেছেন। অর্থাৎ আমরা এখানে দেখতেছি, তাদের মতে, সরকার কোন অবস্থাতেই তারেক রহমানকে এভাবে দেশে আনতে পারবেনা বা এখানে ইন্টারপোলকে জড়ানো ঠিক হয়নি বা ইন্টারপোল নামক এই সংস্থার খুব একটা কাজ আছে বলে মনে করা হচ্ছেনা। এখানে লক্ষণীয় যে বিষয়টি, তারেক রহমানের বিষয়টি রাজনৈতিক এবং একইসাথে আইনীদিক। যাদের বক্তব্য পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, ক্ষমতাসীনদের বক্তব্য বাদে, ব্রিটিশ সরকারের প্রতিনিধিত্বকারী বা এটর্নি অফিস অথবা নিকটস্থ কনস্যুলার অফিসের কোন বক্তব্য এখনো আমরা পাইনি বা দেখিনা, যেমন করে আমরা দেখেছি বাংলাদেশের এটর্নি অফিসের বক্তব্য।কেননা, দুই দেশের এটর্নি অফিসের কিংবা দুই দেশের সরকারি পর্যায়ের অথবা দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যায়ের বক্তব্য এখানে এই সংবাদের জন্য খুব কাঙ্ক্ষিত হতো অথবা জনগণের সকল প্রশ্নের মীমাংসা বা উত্তর যথাযথভাবেই দিতে পারতো এবং সেটা হওয়াই অধিক যুক্তিসঙ্গত। কিন্তু এক্ষেত্রে আমরা এখন পর্যন্ত ব্রিটিশ সরকারের কোন বক্তব্যই পাইনি।
ইতিমধ্যে সুশীল সমাজের ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকেই বলছেন তারেক রহমানের গ্রেপ্তারী পরোয়ানা স্রেফ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এবং এটা একধরনের আই ওয়াশ মাত্র। কেউ কেউ এমনকি খোদ বিএনপিও বলছে, দুদুক সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে এমন কাজ করেছে, অন্তত: দুদুকের কার্যক্রমে তাই প্রমাণিত। বিএনপির শামসুজ্জামান দুদু এবং ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, সরকারের মন্ত্রীদের বক্তব্যের পর পরই দুদুকের মামলার আবেদন সেকথাই প্রমাণ করে। ইতিমধ্যে বিএনপি তারেক রহমানের ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার প্রতিবাদে হরতাল সহ নানা কর্মসূচী পালনের হুমকি দিয়েছে। বিভিন্ন শহরে হরতাল ও বিক্ষোভ ডাকা হয়েছে। আবারো হরতালের কর্মসূচী দেয়া হয়েছে এবং আরো কঠোর কর্মসূচীর কথা বলা হচ্ছে।
ক্ষমতাসীন সরকার মূলত নির্বাচনকে মাথায় রেখে রাজনৈতিক গুটির চাল চালিয়ে যাচ্ছে।আওয়ামীলীগ জানে, এবং বিশেষ করে হেফাজতের অবরোধ ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের ৪৮ ঘন্টার হুমকির পরিকল্পনা নস্যাতের পর বলা যায় এখন অনেকটাই রিলাক্স মুডে, যদিও সরকারের সামনে বেশ কিছু সমস্যা ও রাজনৈতিক জটের কারণে বিপর্যস্ত অবস্থা। তথাপি হেফাজতের এতোবড় অবরোধ সাকসেসফুলি নস্যাৎ করে দেয়ার পরে এখন বলা যায় অনেকটাই আত্মতৃপ্তিতে আছে।আর তা থেকেই সরকার ও তার মন্ত্রীদের বেপরোয়া ও বেফাঁস বক্তব্য-বিবৃতি থেকেই আবারো তাদের স্বরূপে ফিরে আসার কথা জানান দিচ্ছে। যেমন করে ক্ষীণ আসার সঞ্চার হয়েছিলো, তারানকোর দূতিয়ালির মাধ্যমে, এখন বরং সেই অবস্থানে আর সরকার নেই। সরকার এখন বরং আগেকার মতোই বিরোধীদলকে উপেক্ষার নীতিতে নিয়ে নির্বাচনের দিকে এগুচ্ছে। সরকার চাচ্ছে, নিজেদের ছকে, নিজেদের ফর্মুলামতে আগামী নির্বাচন ডিসেম্বরে করে নিতে। আর তা করতে গিয়ে একের পর এক হার্ড লাইনে সে এগুচ্ছে। তারেকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও এমকে আনোয়ারকে জেলে প্রেরণ তারই সিগন্যাল বহন করে।
তারেক রহমানের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার ফলে সরকার এক ঢিলে সব ফ্রন্ট আপাতত: ওপেন করে খেললেও বিএনপিকে এবং বিশেষকরে বিএনপির প্রভাবশালী নির্বাচনে জিতে আসারমতো সকল নেতাদের উভয় দিক থেকেই চাপের মধ্যে রেখে নির্বাচন পর্যন্ত এগিয়ে যেতে চাচ্ছে।তারেক রহমানকে লন্ডন থেকে ফিরিয়ে এনে বিচারের কাঠগড়ায় দাড় করানোর মহৎ কোন উদ্দেশ্য নিয়ে আওয়ামীলীগ এগুচ্ছেনা। যদি তাই হতো তবে বিগত চার বছরের মধ্যে আওয়ামীলীগ তারেকের বিরুদ্ধে কোন না কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতো।সরকার জানে তারেক রহমানের এই বার্নিং ইস্যুতে বিএনপিকে নিয়ে এই মুহূর্তে খেলা খেলতে অনেক সহজ এবং তাতে সরকারের লাভ বৈ ক্ষতি নেই। একদিকে যেমন সরকার তার সকল ব্যর্থতার ইমেজ একই সাথে হেফাজতের অবরোধ নস্যাতের নানা মানবিক ও আন্তর্জাতিক মিডিয়ার চাপ কৌশলে এড়িয়ে দেশবাসীর ও মিডিয়ার নজর একটিমাত্র ইস্যুতে ফোকাস করে মাঠ গরম করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে পারবে, অপরদিকে তারেক দেশে আসা না আসা নিয়ে বিএনপিকে চরম চাপের মধ্যে রেখে দল ভাঙ্গার সেই পুরনো খেলা বেশ দক্ষতার সাথে করা যাবে, যেহেতু বিএনপি এখন পর্যন্ত নিজেদের গুছিয়ে নিতে পারেনি, সাংগঠণিকভাবে এখনো অনেক বিপর্যস্ত- সরকার এই গ্যাপটার ফায়দা ষোলোআনাই নিতে চাচ্ছে।
সরকার ভালো করেই জানে, মামলা-মোকদ্দমা মাথায় নিয়ে, ঝুঁকি নিয়ে তারেক রহমান বা বিএনপি অনুকূল রাজনৈতিক পরিবেশ ছাড়া দেশে আসবেননা।আর এই ইস্যুতে রাজনীতি গরম করে তারেক রহমান যদি না আসেন, তবে তাতে বিএনপিরই লস। কেননা, বিএনপি ইচ্ছায় হউক আর সরকারের প্রি-কনসিভড নোশানের( নিশ্চয় কেউ না কেউ বিএনপির ভেতর থেকে সরকারের এজেন্ট হয়ে কাজ করছেন অতি সূক্ষ্মভাবে) কারণেই হউক ক্ষমতাসীনদের পাতানো ফাঁদে পা দিয়ে ফেলেছে।জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারেক রহমান দেশে ফিরবেন কিনা সেটা এক মিলিয়ন ডলার প্রশ্ন তাতে সন্দেহ নাই। আর যদি না আসেন তবে নেতা-কর্মীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিবে, সরকারতো সেটাই চাচ্ছে। ক্ষমতাসীনরা জেনে-শুনেই ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পাঠিয়েছে।আর তা নাহলে ব্রিটিশ সরকারের সাথে নেগোসিয়েশন করতো-যদি সরকারের সদিচ্ছা থাকতো বিচারের কাঠগড়ায় তাকে দাড় করানোর।
এদিকে লন্ডনের বাংলা মিডিয়ার সূত্রে জানা গেছে, তারেক রহমান আবারো বেলজিয়াম সফর করেছেন, যা পত্র-পত্রিকায় এসেছে। দেশে যাওয়ার জন্য তিনিও মরিয়া, সেজন্য কূটনৈতিক লিয়াজো জোরদার করার চেষ্টায় তিনি রয়েছেন বলে জানা গেছে। ব্রিটিশ ফরেন অফিসের সাথে যোগাযোগ করেও এই ব্যাপারে কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অবশ্য যতক্ষণ পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের বা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক কোন কিছু না আসে, ততক্ষণ পর্যন্ত ব্রিটিশ সরকারের কোন বক্তব্যও আশা করাটা ঠিক হবেনা। কেননা এখন পর্যন্ত তারেক রহমানের এই ইস্যু পত্র-পত্রিকা ও মিডিয়ার বদৌলতে সরগরম হয়ে আছে। তবে, তারেক রহমানের জন্য সব চাইতে যে ভালো খবর হলো, আর তা হচ্ছে, মাত্র কয়েক বছর আগেও যে বাংলাদেশের সিংহ ভাগ জনগণ এবং মিডিয়া তাকে নিয়ে যে সব কল্প-কাহিনী, রূপকথার গল্পের মতো ডালা-পালা ছড়িয়েছিলো, সেটা সত্য হউক বা মিথ্যা হউক, আজকে তা ইন্টারপোলের মাধ্যমে সরকারের এই ন্যক্কারজনক খেলায়, বলা যায় সরকারের অজান্তেই আপামর জনগণের কাছে বিএনপির এই নেতা আবার জনপ্রিয় হয়ে উঠতেছেন। ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তারেকের জন্য যেন তার ইমেজ সংকট থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ করে দিয়েছে। মানুষ আবার ধীরে ধীরে সেই সব গল্প-কাহিনী ভুলতে শুরু করেছে, মিডিয়া এখন আবার তারেককে নিয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। বিগত কয়েক সপ্তাহের দেশে-বিদেশের সব কটা পত্র-পত্রিকা ও মিডিয়ার শিরোনাম তারেক হয়ে আসছেন, টক শো গুলোতে তারেককে নিয়ে নানান বিশ্লেষণ হচ্ছে। এতে বরং তারেকের নতুন এক ইমেজ জনগণের কাছে চলে এসেছে, যেখান থেকে বিএনপি রাজনৈতিক দক্ষতা ও কৌশলের পরিচয় দিতে পারলে ফায়দা তুলে নিতে পারবে।
তারেক রহমান ফিরবেন কি ফিরবেন না সেটা যেমন রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, একইভাবে সরকার সফল হবে কি হবে না সেটাও আইনি সিদ্ধান্ত। হুট করে এই ব্যাপারে আওয়ামীলীগের এক শ্রেণীর মন্ত্রীদের মতো সিদ্ধান্ত টানাটা যুক্তিসঙ্গত হবেনা; কেননা এখানে বেশ কিছু আইনি এবং রাজনৈতিক বিষয় জড়িত।আইনি বিষয়ের ক্ষেত্র অনেক জটিল এবং দীর্ঘসূত্রী-তাতে কোন সন্দেহ নেই। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত যেকোন সময় পাল্টে যেতে পারে। যেমন ব্রিটিশ কূটনৈতিক মিঃ গিবসন অতি সম্প্রতি সুন্দর করেই সহজেই সমীকরণ করেছেন যে, বাংলাদেশের রাজনীতি বুঝা বড় জটিল। আসলেও তাই। কারণ এখানকার রাজনীতি কোন ছক বা গতি ধরে এগোয়নি। এখানে স্বার্থের অন্ধগলির পথ ধরে পঙ্কিল পথে রাজনীতি এগোয়, কখনো সর্পিল গতিতে, কখনো আকা-বাঁকা পথে হাটে।আর যখন তখন সেন্টিমেন্টের মতো রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত পরিবর্তিত হয়, উদ্ভব ঘটে থাকে। এরশাদ সাহেবকে ধন্যবাদ একারণে যে, তিনি এই বিষয়টি সঠিকভাবেই বুঝে এপ্লাই করতে পেরেছিলেন। তার একটা বিখ্যাত বাণী রয়েছে, যেমন তিনি বলেছিলেন- এদেশে সবই সম্ভব। ইয়েস, সম্ভব বলেই বিএনপি যেমন গদি রক্ষার্থে সংসদে যাবে, কিন্তু বলবে জনগণের জন্য সংসদে যাচ্ছে। আর সেখানে গিয়ে যদি ( এমন হউক, প্রাণবন্ত সংসদ হউক, মনে-প্রাণে তাই চাই) কোন ক্রমে দুই রাজনৈতিক দল এক হয়ে যায়, অন্তর্বর্তী বা তত্বাবধায়ক যে নামেই ডাকা হউক না কেন, সরকারের অধীনে নির্বাচন ইস্যুতে দুই দল এক হয়ে গেলেই তারেক রহমানের ইস্যুর নাটকীয় পরিবর্তন হতে সময় লাগবেনা। তবে এক্ষেত্রে বিএনপি যদি আওয়ামীলীগের ফর্মুলায় আত্মাহুতি দেয়, দলের জন্য কতোটুকু ক্ষতি বা লাভ হবে তা কেবল ভবিষ্যতই বলে দিবে। আর অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে, দুই দলকেতো নির্বাচনের প্রশ্নে এক হতেই হবে, এর বাইরে অন্য কোন ব্যবস্থাতো নেই।তবে বর্তমান সংবিধানের ৫৭(৩), ৫৮(৩),৫৮(৪) অনুচ্ছেদ বহাল রেখে বিএনপির পক্ষে যে তত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়া সম্ভব নয়, আওয়ামীলীগ সরকার সেটা জেনে-শুনেই বিএনপিকে নির্বাচনের আগ মুহূর্তে খুব সূক্ষ্মভাবে দাবার চাল চেলে সংসদ অধিবেশনে স্বাগতম যেমন জানাবে, অপরদিকে দেশের চারটি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের যে উৎসব আমেজ দুই দলের সব নেতা-কর্মীদের মধ্যে ইতিমধ্যে পরিলক্ষিত হচ্ছে, বিএনপি ও আওয়ামীলীগের রাজনীতির বন্ধ দুয়ারে নতুন দরজা-জানালা যেমন খুলে দিবে, ক্ষমতাসীন ও বিরোধীদল সেই নির্বাচনী আমেজ নিজেদের অনুকূলে নিতে এই সব স্থানীয় সংস্থার নির্বাচন ও আগামী রমজানের ইফতার রাজনীতিতে ঝড় তুলে ডিসেম্বরের মাহেন্দ্রক্ষণে সংবিধান কতোটুকুইবা আর পরিবর্তনের সুযোগ সামনে থাকবে, সেটা যেমন নিশ্চিত করে বলা যায়না, তেমনি করে তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নিয়ে ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক এই খেলা কোথায় গিয়ে দাড়ায়, তা দেখার জন্য নভেম্বরের শেষ বা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা ছাড়া আর কোন গত্যন্তর নেই। আর সেই সময় পর্যন্ত আওয়ামীলীগ সরকার মাঠ গরম করে রাখার জন্য একটি য্যুতসই রাজনৈতিক ইস্যু মাঠে নিয়ে ভালো করেই খেলে ফায়দা লুটতে একশোভাগ যেমন চেষ্টা করবে, একইসাথে দল গোছাতে ব্যস্ত বিএনপি কতোটুকু রাজনৈতিক শক্তিমত্তা প্রদর্শন করতে সক্ষম হয়, সেটার উপরও অনেকটা নির্ভর করে।
28th May 2013.UK