সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতা বিরোধী অপরাধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় জামায়াতের সদস্য, ৭১এর মুক্তিযুদ্ধের সময় ফরিদপুরের সেই বিখ্যাত ত্রাস, রাজাকার বাচ্চু মিয়া ওরফে আবুল কালাম আযাদের ফাসির রায় প্রকাশের পর লন্ডন- এইদেশ ব্রিটেন প্রবাসী সমাজ সচেতন, সাহিত্যিক, কবি, সাংবাদিক, লেখক, রাজনীতিবিদ সহ কমিউনিটি ব্যক্তিত্বদের প্রতিক্রিয়া জানার চেষ্টা করি।এই পর্যায়ে টেলিফোনে যোগাযোগ করি ব্রিটেন প্রবাসী বিশিষ্ট সাহিত্যিক, লেখক শামীম আজাদ-এর সাথে। প্রচণ্ড ব্যস্ত শামীম আজাদের সাথে যোগাযোগ করার সাথে সাথেই তিনি আমার টেলিফোনের জবাবে সহাস্যে আদালতের এই রায় নিয়ে নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন কবিতার ঢঙ্গে,রূপক অর্থে- অতি সুন্দর ভাবে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, রায়…এতো বৃষ্টিপাত নয়; এক ফোটা জল শুধু। তবুও এই জলে আশার আলো দেখতে পাই।
শামীম আজাদ- একাধারে কবি, লেখক, সাংবাদিক এবং একজন শিক্ষক। ব্যস্ততার বাইরেও কমিউনিটির উন্নয়নে ও সাহিত্য আড্ডায় নিয়মিত, আছেন বিশ্ব সাহিত্য নিয়ে একগাদা কাজ নিয়ে। এছাড়াও নিজ উদ্যোগে সমমনাদের নিয়ে আজ থেকে বেশ কয়েক বছর আগে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিজয় গাথা নিয়ে অনিন্দ্য সন্দর ও ইতিহাসের পর্যায়ের পরিক্রমার উজ্জ্বলতম অংশের অনাবিল শাশ্বত নজিরবিহীন এক প্রকল্প বিজয় ফুলের শুভ সূচনা করেন, যা আজ ব্রিটেন ছড়িয়ে ইউরোপ, মধ্য আমেরিকা হয়ে বাংলাদেশের প্রান্ত পর্যন্ত ছুঁয়েছে।
আবুল কালাম আযাদের রায় নিয়ে শামীম আজাদ বলেন, এই রায় বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের সকল মানুষের প্রত্যাশার প্রতিফলন। তিনি আরও বলেন, যে অঙ্গীকার নিয়ে এই সরকার ক্ষমতায় এসেছিলো, যে অঙ্গীকার নিয়ে নতুন প্রজন্মকে কাছে পেয়েছিলো এই সরকার, সেই অঙ্গীকার পূর্ণ হবে, অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তি কার্যকর হলে, কেবল মাত্র তার পরেই।
শামীম আজাদ আরও বলেন, রায় পাওয়া শেষ নয়, রায় পাওয়া শুরু মাত্র। বাংলাদেশের অবয়ব সংস্থান কখনোই স্থিত হবেনা, যতক্ষণ না এই অভিযুক্তরা শাস্তি প্রাপ্ত হচ্ছে।
মাস-মার্ডারের বিচার অবশ্যই কাম্য, তবে বিচার প্রক্রিয়া স্বচ্ছ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বজায় রাখা উচিৎ- সৈয়দ শাহীন সলিসিটর
আমি এই পর্যায়ে টেলিফোনে যোগাযোগ করি ব্রিটেন প্রবাসী বিশিষ্ট আইনজীবী, কবি সৈয়দ শাহীন-এর সাথে। শাহীন কাজের ক্ষেত্রে একাগ্র ও ব্যস্ত আইনজীবী, যোগাযোগ করার সাথে সাথেই তিনি আমাদের টেলিফোনের জবাবে আদালতের এই রায় নিয়ে নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন আইনি দৃষ্টি কোন থেকে ব্যক্ত করার অভিপ্রায় নিয়ে বলে; মাস-মার্ডারের অপরাধীদের বিচার অবশ্যই কাম্য এবং তা হওয়া উচিত।দ্বিতীয়ত: আইনের দৃষ্টিকোণ থেকে বিচারকালিন প্রক্রিয়া সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বজায় রাখা উচিৎ।
সলিসিটর সৈয়দ শাহীন আরও বলেন, যদি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ অর্থাৎ পুরোপুরি অবাধ নিরপেক্ষ ভাবে আযাদের বিচারের রায় প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে থাকে, তবে সেই রায়কে অবশ্যই অভিনন্দন জানাই। কেননা মানবতা বিরোধী অপরাধীর পক্ষে পৃথিবীর কোন বিবেকবান মানুষের সমর্থন থাকার কথা নয়।
তবে এক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশে একটি গোষ্ঠী এ বিচারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।এই অবস্থায় ইতিমধ্যে প্রকাশিত ট্রাইব্যুনালের পদত্যাগী এক বিচারপতি ও আরেক প্রবাসীর স্কাইপ কথোপকথনের প্রেক্ষিতে বিচার প্রক্রিয়ার উপরে সাধারণ মানুষের সন্দেহ আরোপ, এক্ষেত্রে বিচারপতির পদত্যাগ সেই সন্দেহে অনেকাংশে দায়ী।
। লেখা-লেখির সাথেও জড়িত।কবিতা লেখা একধরনের নেশা।ইতিমধ্যে তার কবিতার গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে, যা সূধীজনের প্রশংসা কুড়িয়েছে।জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির গ্র্যাজুয়েট সৈয়দ শাহীন সস্ত্রীক ব্রিটেনে বসবাস করেন।এক সময় ছিলেন প্রগতিশীল রাজনীতির সাথে জড়িত, বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালিন সময়ে ছিলেন ছাত্র ইউনিয়নের একনিষ্ঠ নেতা ও সমর্থক । লন্ডন এইদেশের সাথে টেলিফোনে সৈয়দ শাহীন উল্লেখ করেন, আদালতের রায়কে অবশ্যই সাধুবাদ জানাই।কিন্তু কতিপয় নেতিবাচক বিষয় ইতিমধ্যে গুঞ্জরিত হওয়ায় দেখার বিষয় বিচার কাজে যদি কোনরূপ হস্তক্ষেপ করা হয়েছে কিনা, কেননা বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বজায় রেখে বিচার কার্য স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষতার অধিকতর গ্যারান্টি দিয়ে থাকে।
Salim932@googlemail.com
22nd Jan.2013.