সম্প্রতি গোটা পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং বিশ্ব মিডিয়ায় পাকিস্তানের সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ ও ডঃ তাহির উল ক্কাদরীকে নিয়ে বেশ সরব আলোচনা অব্যাহত থাকায়, এ বিষয়ে একটু আগ্রহ জাগে কিছু লেখার বা পাঠকদের সাথে তথ্য বিনিময় করার।
পাকিস্তান সঙ্গত কিংবা বাঙালির জানা-অজানা, চেতন-অবচেতন মনে যেন-তেন ভাবে একটা না একটা স্থান দখল করেই আছে। আর ভৌগলিকভাবে বাংলাদেশের একেবারে নিকটবর্তী হওয়াতে, একই সাথে ঐতিহাসিক কারণে পাকিস্তান ও এর রাজনীতি বাংলাদেশের একটা উল্লেখযোগ্য স্থান( মানে মিডিয়া ও আলোচনায়) দখল করে আছে।
ডঃ তাহির উল ক্কাদরী যখন তত্বাবধায়ক সরকারের দাবী সহ নির্বাচন কমিশন সংস্কারের লক্ষ্যে ইসলামাবাদ ঘেরাও ও অবরুদ্ধ করে রাখেন, তখন বাংলাদেশ সহ বিশ্ব মিডিয়া বেশ উৎসাহ নিয়ে লুফে নেয় ডঃ তাহিরের আন্দোলন ও বক্তব্যকে। কোন কোন পত্রিকা কে এই তাহির উল ক্কাদরী শিরোনামে লিড নিউজ করে।আর খোদ কানাডার এক সংবাদ পত্র তাহির উল ক্কাদরী সম্পর্কে এসাইলাম সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশ করে বিশ্ব মিডিয়ায় ডঃ তাহিরকে আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে আসে, যা বাংলাদেশের কতিপয় মিডিয়া বাছ-বিচার না করেই সেই প্রবাহে নিজেকে শরিক করে সংবাদ পরিবেশন করে।
ফেইস বুক এবং টুইটার যারা অভ্যস্ত ঐ সময়ের সামাজিক নেটওয়ার্কে দেখেছেন, কি পরিমাণ ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া চলে এই প্রসঙ্গ নিয়ে।বলা বাহুল্য এর অব্যাহতি পরে ডঃ তাহির উল ক্কাদরী নিজে সংবাদ সম্মেলন করে যখন অকাট্য দলিল হাজির করেন, তখন বিশ্ব মিডিয়ায় সেই সংবাদ থাকে অনুপস্থিত, সেই বাংলাদেশেও।
বলা বাহুল্য, ডঃ তাহির উল ক্কাদরী একজন খ্যাতনামা ইসলামিক স্কলার। মিনহজ উল কোরআন নামক ইসলামিক প্রতিষ্ঠানের চেয়ার ও প্রতিষ্ঠাতা, যার রয়েছে বিশ্বব্যাপী শাখা-প্রশাখা।১০০০ হাজারেরও বেশী ইসলামী ধর্ম গ্রন্থের রচয়িতা।হাদিস শাস্রের অসংখ্য রেফারেন্স সহ হাদিসের ব্যাখ্যা প্রাঞ্জল ও অকাট্য প্রমাণ এবং দলিল-দস্তাবেজ সহকারে তুলে ধরে গ্রন্থাকারে প্রকাশ করেছেন, যা অনেক মূল্যবান দলিল হিসেবে স্বীকৃত।ডঃ তাহির উল ক্কাদরীর সব চাইতে উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ দালাইলাল বারাকাত-যা হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শানে-শওকত ও মোজেজা ও দুরুদ-সালামের ফায়দা ও বরকত নিয়ে হাদিসের আলোকে লেখা, তা পাঠ করে বাস্তব জীবনে ফায়দা হাসিল হয়নি, এমন পাঠক পাওয়া খুবই মুস্কিল।কেউ কেউ দালাইলাল বারাকাতের বদৌলতে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্বপ্নে দর্শন লাভের নিদর্শনও মিডিয়ায় আলোচিত হয়েছে।
পাকিস্তানের কেন্দ্র স্থলে তেহরিক-ই-মিনার নামক বিশাল উন্মুক্ত স্থানে প্রতি বৎসর ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আয়োজন করে থাকেন ডঃ তাহির উল ক্কাদরী এবং মিনহাজ উল কোরআন। যাতে লাখো-লাখো লোক পাঁচ দিন ব্যাপী ঐ মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামে শরিক হয়ে থাকেন। তেহরিক-ই-মিনারের ঐ ওয়ায়েজ দিনে দিনে এতো জনপ্রিয় হয়ে উঠে যে ডঃ তাহির অনেক রাজনীতিবিদ ও নেতার ঈর্ষার কারণ হয়ে পড়েন।
এছাড়াও বিশ্বব্যাপী মিনহাজ উল কোরআনের দাওয়াতে ডঃ তাহির সেমিনার, সিম্পোজিয়াম ও ওয়ায়েজ এবং একইসাথে নানা ফেইথ ফাউন্ডেশনের সভায় বক্তব্যও দিয়ে থাকেন। সম্প্রতি ভারতের গুজরাটে এবং আমেরিকার ফেইথ ফাউন্ডেশনের ব্যানারে ডঃ তাহির অত্যন্ত যুক্তিপূর্ণ ও তথ্য এবং একই সাথে কোরআন-হাদিস ও বিভিন্ন মাযহাব, বিভিন্ন ইমামের মাসালার আলোকে যে বক্তব্য দেন, তা বিশ্ব মিডিয়ায় এবং ইসলামী দুনিয়ায় ব্যাপক আলোচিত হয়। ইতিমধ্যে ডঃ তাহির হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও গৌস-পাকের(হযরত আব্দুল কাদির জিলানী)শানে-শওকতে এবং জুসনে জৌলুসের একনিষ্ঠ প্রচারক, যে কারণে তার অনেক বক্তব্য নিয়ে পাকিস্তানে ও বিশ্বে অনেক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।এছাড়াও জনপ্রিয়তার তুঙ্গে উঠার আগে তিনি যখন পাকিস্তানের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছিলেন, তখন তার ভাষায় ইসলামী রীতি-নীতির সাথে কন্ট্রাডিক্ট হওয়াতে রাজনীতি থেকে তিনি ইস্তফা দেন, এমনকি পার্লামেন্ট থেকেও।
কানাডার যে পত্রিকা ডঃ তাহিরকে কানাডায় একজন এসাইলাম ইমিগ্র্যান্ট হিসেবে উল্লেখ করে সংবাদ পরিবেশন করেছে-তাতে অনেক তথ্যগত ভুল কিংবা বিভ্রান্তি রয়েছে।কেননা কানাডার পত্রিকার সংবাদে ডঃ তাহিরকে এসাইলাম সিকারের ক্যাটাগরিতে কানাডার পাসপোর্ট ধারী বলা হয়েছে। অথচ ১৯৮৯ সালে ডঃ তাহির উল ক্কাদরী কানাডায় পিএইচডি করার জন্য গেলে হাইলি স্কিল্ড ভিসায় তখনকার সময় কানাডার লেটার অব ইমিগ্রেশন তিনি পান।এসাইলাম সিকার হিসেবে নন।আর ১৯৮৬ সালের ২৪ জুন প্রথম কানাডার পাসপোর্ট তিনি লাভ করেন।আর ঐ সময়ের প্রায় মাস খানেক আগে তিনি পার্লামেন্ট সদস্য থেকে ইস্তফা দেন। ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত তিনি পাকিস্তানী পাসপোর্ট বহন করেন। গত সপ্তাহে ডঃ তাহির নিজে প্রেস কনফারেন্স করে কানাডার ঐ পত্রিকার তথ্যের ভুলের প্রমাণ সহ কানাডা ইমিগ্রেশনের লেটার উপস্থাপন করে নেওয়াজের দিকে অঙ্গুলি তুলে বলেন, মিথ্যা প্রচার করে ব্যক্তি ইমেজ নষ্ট করার যে হীন প্রয়াস খোদাকা ওয়াস্তে সেই পথ থেকে সরে এসে দলিল সহ যুক্তি প্রমাণ ও মেধার পরিচয় দেয়ার জন্য।কানাডা ইমিগ্রেশনের ঐ লেটারে দেখা যায়, ডঃ কাদরীকে কানাডা কর্তৃপক্ষ একজন ইসলামিক স্কলার, মিনহাজ উল কোরআনের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
০২) হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আগমনে পৃথিবী ও মানব সভ্যতা অন্ধকার যুগ থেকে আলোর পথে এসেছে, এতে কারো কোন সন্দেহ নেই।ইংল্যান্ডের বিখ্যাত লেখক মাইকেল হার্টস তার হান্ড্রেড গ্রন্থে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বিশ্বের সবচাইতে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব ও সংস্কারক হিসেবে ১০০জনের সর্বোচ্চ আসনে স্থান করে দিয়েছেন।কোরআনুল করীমে স্বয়ং আল্লাহ পাক ঘোষণা করেছেন, সূরা আল-ইমরানে ওয়া ইজ আখাজাল্লাহু মিশাক্কান নাবিয়্যিনা লামা আতাইতুকুম মিন কিতাবি…… থেকে শুরু করে ফামান তায়াল্লা বায়দা জালিকা ফাউলা ইকা হুমুল ফা-সিক্কুন।আল্লাহ পাক নবীদের কাছ থেকে অঙ্গীকার নিয়েছে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মানার জন্য, শুধু অঙ্গীকার নিয়ে ক্ষান্ত হননি, এখানে নবীদেরকে তিনি বারে বার মনে করিয়ে দিয়েছেন নিজেদের উপর, নিজেদের কাঁধে নেয়া দায়িত্ব সম্পর্কে হুজুরের ব্যাপারে, শুধু তাই নয়, সেখানে তিনি নবীদেরকে বলছেন তোমরা একে অন্যের উপর গাওয়া/সাক্ষী হয়ে যাও, যেমন মূসা ইব্রাহিমের উপর গাওয়া, একইভাবে একে অন্যের উপর গাওয়া হয়ে যাও, একথা বলে আল্লাহ পাক থেমে যেতে পারতেন, কিন্তু না কারণ এখানে তিনির মাহবুবের ব্যাপারের কথা হচ্ছে, তাই না থেমে বলছেন, স্বয়ং রাব্বুল আলামীন গাওয়া, তা বলেও আল্লাহ পাক থামেননি, তিনি বলছেন, অর্থাৎ আল্লাহ পাক তার জাতের যত (এখানে লাম-এর ব্যাপারে মোফাসসিরে কোরআন যারা তারা অবগত আছেন) তাক্কত আছে সব একাকার বলছেন, এর পরেও (যারা মাহবুব তথা হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লমকে মানবেনা, অর্থাৎ যারা বলে শাফায়াৎ দরকার নেই, হুজুরের শানে-শওকত নিয়ে সন্দেহ ও বিরোধিতা করে)দূর হয়ে যাও, কারণ তারা ফা-সেক।
মহাগ্রন্থ আল-কোরআনে ২২ পারার ২রা রুকুতে ৪১ নম্বর আয়াতে ঈয়া আইয়্যূহাল লাজিনা আমানুজকুরুল্লাহু জিকরান …আল্লাহ পাক তিনির জিকির করার কথা যখনই বলেছেন তখনই সাথে সাথে বলা হয়েছে,হে লোক সকল তোমরা মোহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর দুরুদ পাঠ কর, কারণ আল্লাহ পাক স্বয়ং তিনির মাহবুবের উপর দুরুদ পেশ করেন, ফেরেশতা সকল এবং কূল-মাখলুকাতের সকল কিছুই হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর দুরুদ শরীফ পেশ করে থাকেন।কোরআন শরীফে আল্লাহ পাক তিনির মাহবুবের উপর ওরা ফায়না লাকা জিকরাক বলে রাসূলুল্লাহর জিকির করেছেন।কোরআন শরীফের ২২ পারার ২রা রুকুতে ৫৬ নম্বর আয়াতে যেমন বলা হয়েছে, ইন্নাল্লাহা ওয়ামালা ইকাতাহু ইউসাল্লুনা আলান নাবিঈয়ী ইয়া আঈয়্যু হাল লাজিনা আমানু সাল্লু আলাইহি ওয়াসাল্লিমু তাসলীমা, এই রকম অনেক আয়াতে করীমা রয়েছে।আল্লাহ পাক নির্দেশ করেছেন, যখনই নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নাম নেওয়া হয় তখনই যেন সালাত ও দুরুদ পড়া হয়।
হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবী ক্কাআব বিন ঊজাইর রাজি আল্লাহু তাআলা আনহু হতে বর্ণিত আছে যে, একদা জুমআর খুৎবা প্রদানের জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মিম্বরের প্রথম সিঁড়িতে পা রাখেন,তখন বলেন আমীন,দ্বিতীয় সিঁড়িতে যখন পা রাখেন,তখন বলেন আমীন,তৃতীয় সিঁড়িতে যখন পা রাখেন,তখন বলেন,আমীন।নামায শেষে সাহাবীরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এই তিনবার অস্বাভাবিক ধরনের আমীন,আমীন,আমীন বলার কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন,আমি যখন মিম্বরের প্রথম সিঁড়িতে পা রাখি,তখন জিবরাঈল আলাইহিসাল্লাম ওহী নিয়ে আসেন,বলেন,হালাক বা ধ্বংস হয়ে যাক, সেই সব ব্যক্তি,যে রমজান মাসের রোযা পেলো অথচ গুনাহ মাফ করাতে পারলোনা,এর জবাবে আমি বললাম আমীন।দ্বিতীয় সিঁড়িতে পা রাখার সময় জিবরাঈল বললেন,ধ্বংস হয়ে যাক,সেই সব,যার সামনে আমার নাম নেওয়া হলও অথচ দুরুদ শরীফ পড়লোনা,জবাবে বলেছি আমীন । তৃতীয় সিঁড়িতে যখন পা রাখলাম,জিবরাঈল বললেন,ধ্বংস হয়ে যাক,সেই সব যে বা যারা তার মা-বাবা কিংবা উভয়ের যেকোনো একজনকে পেলো অথচ তাদের খেদমত করে জান্নাত হাসিল করতে পারলোনা,জবাবে বলেছি আমীন।সুতরাং দেখা যাচ্ছে,
স্বয়ং আল্লাহর রসূল একদিন মসজিদে নববীতে যখন খুৎবা দিতে মিম্বরে উঠেন, দ্বিতীয় সিঁড়িতে যখন পা রাখেন তখন জিবরাঈল আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওহী নিয়ে এসে বলেন ধ্বংস হয়ে যাক সেই সকল, যার সামনে আল্লাহর নবীর নাম নেওয়া হলও অথচ দুরুদ পাঠ করলোনা,এর জবাবে আল্লাহর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন আমীন। জিবরাঈল বলেছেন, নবী করীম আমীন বলেছেন,এখানে একেবারে সিল মোহর মারা হয়ে গেছে। বোখারী শরীফ, তিরমিয শরীফ,মুসলিম শরীফ সহ প্রায় সকল হাদিস ব্যাখ্যাকারীদের বর্ণনায় এই হাদিসটি পাওয়া যায়।
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর দুরুদ পড়া নিয়ে কোন ফিক্কাহ, মাযহাব, ক্কিয়াস, ও কোন ইমামের মধ্যে বিরোধ নেই। শুধু মাত্র বিরোধ সালাম প্রকাশে-কেউ দাঁড়িয়ে, কেউ বসে পড়েন। অথচ এই সম্পর্কিত বিষয়ে (দাঁড়িয়ে পড়বেন নাকি বসে পড়বেন)হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেমন নীরব, সাহাবায়ে কেরামগনও নীরব।কিন্তু পড়তে নিষেধ করেছেন এমন কোন অকাট্য প্রমাণ নেই, বরং সালাম ও দুরুদ পড়তে উৎসাহিত ও অসংখ্য নেয়ামত ও ফজিলতের কথাই বলেছেন, যা হাদিস শাস্ত্রেও উল্লেখ আছে।
ইসলামের ইতিহাসের দ্বিতীয় খলিফা ওমর ইবনূল খাত্তাব বলেছেন, দুরুদ শরীফ পাঠ ব্যতীত কোন দোয়াই আল্লাহর দরবারে পৌঁছেন। হাদিস শরীফ হতে বর্ণিত আছে, যিনি দিনে হাজার বার দুরুদ শরীফ পড়বেন নিয়মিত, মৃত্যুর আগে জান্নাত দেখে তিনি মৃত্যু বরণ করবেন। সহীহ হাদিস শরীফে উল্লেখিত আছে যে, শুক্রবার জুমআর দিন আসরের নামাজের পর আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর ৮০ বার- আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মোহাম্মাদানিন নাবিইয়িল ঊম্মিঈয়ী ওয়ালা আলিহী ওয়া সাল্লিম তাসলীমা – এই দুরুদ শরীফ পাঠ করলে ৮০ হাজার বৎসরের গোনাহ যেমন মাফ হবে, সওয়াব ও হবে এই পরিমাণ। শুক্রবার জুমআর দিনে ও সোবে জুমআর আগের রাতে ফেরেশতারা সোনার কলম-কাগজ হাতে নিয়ে জমিনে বেরিয়ে পড়েন যারা কসরতের সাথে দুরুদ পড়েন, তাদের নাম লিখে জমা করার জন্য।সুতরাং শুক্রবার বেশী বেশী করে দুরুদ পাঠ করা উচিৎ।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, একবার জিবরাঈল আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসে বলেছেন, এটা মুসনাদ ইমাম আহমদ হাদিস নম্বর ১৬৬৪ এ ভলিউম ১ পেইজ নম্বর ৪০৭ তে বর্ণনা করেছেন, যা দারুল ফিকর, বৈরুত থেকে প্রকাশিত হয়েছে, যে কেউ আল্লাহর নবীর উপর একবার দুরুদ পাঠ করলো, আল্লাহ পাক তার উপর যেমন অগণিত রহমত নাযিল করবেন, তেমনি তাকে নিরাপদ রাখবেন। তিরমিয শরীফে (ভ-৪,পৃ-২০৭,হাদিস ২৪৬৫,দারুল ফিক্কর) সাঈয়েদুনা ঊবাইব বিন ক্কাব বলেছেন, একবার আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বললাম, আমি আমার সারাটা সময় দুরুদ শরীফ তেলাওয়াতে কাটিয়েছি, জবাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, এতেই তোমার সব চিন্তা, সমস্যা দূরীভূত করার জন্য যথেষ্ট।
সহীহ মুসলিম শরীফে পৃষ্ঠা নম্বর ২১৬, হাদিস নম্বর ৪০৮ এ সাহাবী হযরত আবু হুরাইরা হতে বর্ণিত আছে যে, যে কেউ হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর একবার দুরুদ শরীফ পাঠ করবেন, আল্লাহ আজ্জা ওয়াজাল্লা তার উপর দশ রহমত নাজিল করবেন। সাঈয়েদুনা আনাস ইবনে মালিক হতে বর্ণিত আছে যে, যে কেউ একবার দুরুদ পড়বেন, আল্লাহ পাক তার উপর দশ রহমত নাজিল করবেন, দশ গোনাহ মাফ করে দিবেন (সহীহ আল-ঈহসান বিত তারতীব, পৃষ্ঠা ১৩০, ভলিউম ০২, হাদিস ৯০১)।
০৩) মিনহাজ উল কোরআন লন্ডনের নের্তৃবৃন্দ বলেন, ডঃ তাহির উল কাদির মূল মিশন হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর মিলাদ, দুরুদ ও সালাম পেশের মিশন।জোসনে-জৌলুসের সাথে মিলাদ বানানো ও প্রচার, ইসলামের সঠিকতা ও যৌক্তিকতা দলিল সহকারে বর্ণনা। কোন ধরনের রাজনীতি নয়।বর্তমান পাকিস্তানের সংকটময় মুহূর্তে নাগরিক দায়িত্ব হিসেবে তিনি পাকিস্তানের অখণ্ডতা ও মৌলিক পরিবর্তন আনতে যে চার-দফা আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন, তা সরকার মেনে নেওয়ায় তিনি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের সমাপ্তি করেছেন।রাজনীতি করার অভিপ্রায় নিয়ে নয়। মিনহাজ উল কোরআনের অন্যতম সদস্য, নেতা মোহাম্মদ আফজাল খান যখন উপরোক্ত বক্তব্য তুলে ধরছিলেন আমার কাছে, তখন সেখানে উপস্থিত পেশায় শিক্ষক ইমরান কোরেশী, সিকিউরিটি সার্ভিসে কর্মরত মাওলানা ইমরান খান, ইঞ্জিনিয়ার কাশিফ ইকবাল, শেফ আব্দুল কুদ্দুছ খান, ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ শাহ সাদ জামাল, স্টুডেন্ট কাসেম খান জটাল পুরী ক্বারী মোহাম্মদ আফজাল খানের বক্তব্যের সাথে একমত পোষণ করেন।বলা বাহুল্য এদের অনেকেরই নিজস্ব বিশ্বাস ও আইডলজি রয়েছে, অনেকেই মিনহাজ উল কোরআনের সাথে সম্পৃক্ত নন। তবে তারা সকলেই মোহাম্মদ আফজালের বক্তব্য দৃঢ়ভাবে সমর্থন করেছেন।
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মের অব্যবহিত পরেই স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আলামীন জিব্রাইল আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নির্দেশ করেন, ঝান্ডা(নিশানা) নিয়ে লাগিয়ে দিতে মক্কার মিনার থেকে মাগরীব তক আশারাব পর্যন্ত ঝান্ডা উড়িয়ে দেওয়ার জন্য (সহীহ হাদীস ও বোখারি শরীফে এই রেওয়াত পাওয়া যায়)।স্বয়ং আল্লাহ পাক যেখানে রাসূলুল্লাহর জন্মের সময় ঝান্ডা লাগিয়ে দিয়ে জানান দিলেন, সেখানে আমরা রাসূলুল্লাহর ওম্মত হিসেবে বিশ্বনবীর মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহুয়ালাইহি ওয়াসাল্লাম বানাতে দূষের কিছু নয়, বরং সওয়াবের কাজ।
সত্য, সুন্দর ও ইসলামের সঠিক বাণী আমাদের বুঝার তওফিক আল্লাহ পাক দান করুন-এই হউক আমাদের প্রার্থনা।
Salim932@googlemail.com
27th January 2013,UK.