মৃত্যুদণ্ড সুনির্দিষ্টভাবে নিষিদ্ধ নয়- প্রফেসর ডঃ কাই অ্যামবোস, জার্মানি

মৃত্যুদণ্ড সুনির্দিষ্টভাবে নিষিদ্ধ নয়- প্রফেসর ডঃ কাই অ্যামবোস, জার্মানি

জার্মানির জর্জ অগাস্ট ইউনিভার্সিটি গোটিনগেন এর ইন্সটিটিউট ফর ক্রিমিনাল ল এন্ড ক্রিমিনাল জাস্টিসের চেয়ারম্যান বিখ্যাত লেখক,যুদ্ধাপরাধ ও মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ ডঃ কাই অ্যামবোস মনে করেন, বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধ নিয়ে বিচার কার্যে মৃত্যু দণ্ড কিংবা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এর মামলা পরিচালনা নিয়ে আইনের খুব একটা তারতম্য বা ব্যত্যয় ঘটেনি, যদিও প্রফেসর তার বইয়ে কিছু কিছু কনটেক্সটে দ্বিমত ও ফুট নোট তুলে ধরেছেন।

 

তবে তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদণ্ড বিধান নিয়ে লন্ডন থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক বাংলা পোষ্টের পক্ষ থেকে যোগাযোগের প্রেক্ষিতে ইমেইলে তার হয়ে তার ওয়েব সেক্রেটারি ও সমন্বয়ক প্রফেসর ডঃ ষ্টেফানি বক ইমেইলে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল এবং এর প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের দেয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় আইনের কোন ব্যত্যয় বা লঙ্ঘন ঘটেনি।

 

কেননা প্রফেসর অ্যামবোস তার সাম্প্রতিক বইয়ে দেখিয়েছেন, আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আইনে মৃত্যুদণ্ড রহিত করে সুনির্দিষ্ট কোন বিধান নেই।এমতাবস্থায় বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে কিনা এমন সুস্পষ্ট জবাবে ডঃ ষ্টেফানি বক জানিয়েছেন (বাংলা পোষ্ট)বাংলাদেশ লঙ্ঘন করেনি।

উল্লেখ্য গত কিছুদিন ধরে দন্ড প্রাপ্ত চৌধুরী মঈনুদ্দিন এবং তাদের ব্রিটিশ আইনজীবী টবি কেডম্যান সহ সংঘবদ্ধ একটি গ্রুপ আন্তর্জাতিক আইনের প্রসঙ্গ ও ব্রিটেনের কথা বলে মৃত্যুদণ্ডের মতো বিধানের ক্ষেত্রে আইসিটি ও সুপ্রিম কোর্ট বিধান লঙ্ঘন করেছে বলে নানা যুক্তি তুলে ধরছেন, যা পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হচ্ছে ।ব্রিটেনের সাঈদা ওয়ার্সী এবং এমনেষ্টি ইন্টারন্যাশনাল ও জোরালো বক্তব্য দিয়েছেন।

এই প্রেক্ষিতে বাংলা পোষ্ট মূলত প্রফেসর অ্যামবোসের মতো খ্যাতিমান ও বিশ্বব্যাপী সুনামের স্বীকৃতির সাথে গবেষক ও অধ্যাপকের মতামতের জন্য যোগাযোগ করে।

এক্ষেত্রে জর্জ অগাস্ট গোটেনগেন বিশ্ববিদ্যালয়ে এই খ্যাতিমান চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, সুনির্দিষ্টভাবে মৃত্যুদণ্ড নিষিদ্ধ নেই এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট মৃত্যুদণ্ড লঙ্ঘন করে আইনের ব্যত্যয় করেনি।

উল্লেখ্য, জার্মানির ন্যুরেমবার্গ শহরে অনুষ্ঠিত ট্রাইব্যুনালের বিচারে দণ্ডিত ব্যক্তিরা রায় প্রদানের পর পরই ফাঁসির মঞ্চে গিয়েছিলেন।ন্যুরেমবার্গ ট্রাইব্যুনালে বিচারের আপিলের সুযোগ তাদের ছিলোনা।

ন্যুরেমবার্গ ট্রাইব্যুনালের রায় দেয়া হয়েছিলো ১৯৪৬ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর-১ অক্টোবর। আর দণ্ডিত ব্যক্তিরা ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলেছিলেন ১৯৪৬ সালের ১৬ অক্টোবর। অর্থাৎ রায় প্রদানের ১৫ দিনের ব্যবধানে ঐ সময় ১২ জনের ফাঁসি কার্যকর হয়েছিলো।

ডঃ অ্যামবোস দেশে দেশে মানবাধিকার ও যুদ্ধাপরাধ বিষয়কের একজন গবেষক। তিনি তার সাম্প্রতিক বইয়ে লিখেছেন, বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধ বিচারে তার দেশে প্রণীত ১৮৭২ সালের সাক্ষ্য আইন এবং ১৮৯৬ সালের সিআরপিসি পুরোপুরি প্রয়োগ করেনি, যার ফলে আইসিটি ফেয়ারন্যসের এই সীমিতকরণ রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।

কিন্তু তা সত্যেও বর্তমান সুপ্রিম কোর্ট মৃত্যুদণ্ডের মতো রায়কে তিনি ও তার পক্ষে ডঃ বক কিছুতেই আইনের ব্যত্যয় হয়েছে বলে মনে করছেননা।

ডঃ অ্যামবোসের নতুন বই ট্রিটিস অন ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল ল, ভলিউম ১ঃফাউন্ডেশন ও জেনারেল পার্ট শিরোনামের এই বই অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে প্রকাশিত হয়েছে।

এছাড়াও ২০১০ সালে কলম্বিয়ান পিস প্রসেস, ২০১২ সালে জেরুজালেমের ৫০ বছর নিয়ে তার বই প্রকাশিত হয়েছে।
ন্যুরেমবার্গ ট্রাইব্যুনাল নিয়ে ন্যুরেমবার্গ ডিক্লারেশন পিস প্রসেস এন্ড জাস্টিস নিয়ে ২০০৯ সালে তার আরো এক বই প্রকাশিত হয়েছে।
Prof. Dr. iur. Kai Ambos
________________________________________
Institute for Criminal Law & Criminal Justice
Head Dept. for Foreign and International Criminal Law
Chair for Criminal Law, Criminal Procedure, Comparative Law and International Criminal Law
Georg August Universität Göttingen
Judge at the State Court Göttingen

বইয়ের নাম-
Treatise on International Criminal Law Vol. I: Foundations and General Part, Oxford et al.
(Oxford University Press) 2013, 469 pp.

Salim932@googlemail.com
12th December 2013, London.

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *